ইন্ডাস বা হরপ্পা মহনজোদাড়ো সভ্যতার আইন

হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদারো সিন্ধু সভ্যতার অন্তর্গত।

সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ)। এই সভ্যতার কেন্দ্র ছিল মূলত ভারতীয় উপমহাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সিন্ধু নদ অববাহিকা। প্রথম দিকে এই সভ্যতা পাঞ্জাব অঞ্চলের সিন্ধু অববাহিকায় বিকাশ লাভ করে। পরে তা প্রসারিত হয় ঘগ্গর-ভাকরা নদী উপত্যকা ও গঙ্গা-যমুনা দোয়াব অঞ্চল পর্যন্ত। বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রায় সম্পূর্ণ অংশ, ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের পশ্চিমদিকের রাজ্যগুলি, দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তান এবং ইরানের বালোচিস্তান প্রদেশের পূর্ব অংশ এই সভ্যতার অন্তর্গত ছিল।

পূর্ণবর্ধিত সময়কালে এই সভ্যতা হড়প্পা সভ্যতা নামে পরিচিত। হড়প্পা ছিল এই সভ্যতার প্রথম আবিষ্কৃত শহরগুলির অন্যতম। ১৯২০-এর দশকে তদনীন্তন ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্যের ফলে এই শহরটি আবিষ্কৃত হয়। ১৯২০ সাল থেকে সিন্ধু সভ্যতার প্রত্নস্থলগুলিতে খননকার্য চলছে। ১৯৯৯ সালেও এই সভ্যতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নসামগ্রী ও আবিষ্কৃত হয়েছে। মহেঞ্জোদাড়ো সিন্ধু সভ্যতার একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।

জন মার্শাল দয়ারাম সাহানি রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রত্নতাত্ত্বিক খনন করে এই সভ্যতা গুলি আবিষ্কার করেন ।প্রথমে তারা জানতেন না যে এখানে কোন প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যেতে পারে ।তারা সেখানে রেললাইন পাতর জন্য কিছু ইট পাথরের খোঁজ করছিলেন ।স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সন্ধান কি পেয়ে তারা এগুলি সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন ।এরপর অনুমান করেন এখানে প্রাচীন সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ থাকতে পারে ।এভাবে খনন কার্য চালাতে গিয়ে এই সভ্যতার সন্ধান পেয়ে ছিলেন ।এই সভ্যতা প্রথম পাঞ্জাবের হরপ্পা নামক স্থানে পাওয়া গিয়েছিল বলে এই সভ্যতা কে হরপ্পা সভ্যতা বলা হয় ।কিন্তু সিন্ধু নদের তীরে এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল বলে একে সিন্ধু সভ্যতা ও বলা হয় বলা হয়ে থাকে ।এই সভ্যতার সমসাময়িক আরো অনেক ধ্বংসাবশেষ আরো নানা জায়গায় পাওয়া গেছে। লোথাল কালিবঙ্গান রুপার ইত্যাদি বহু জায়গায় এই সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে ।ভারত এবং পাকিস্তানের রয়েছেবিভিন্ন জায়গায় এই ধ্বংসাবশেষ গুলি ছড়িয়ে- ছিটিয়ে রয়েছে।

এই সভ্যতার মতো উন্নত নগর ব্যাবস্থা ইতিহাস এ সুদূর্লভ । কিন্তু এটি বেদনার যে এইখানের লিপিগুলির পাঠদ্ধার এখন ও সম্ভব হয়নি । কিন্তু যুক্তিবিদ্যার সাহায্য সহজেই অনুমেয় যে, এক উপায়কৌশল ভিত্তিক আইন ব্যাবস্থা প্রচলিত ছিল। আভ্যন্তরিন ও বহির্বানিজ্য এই সভ্যতার সর্বাঙ্গীনে প্রচলিত ছিল। এটি ভাবা অবান্তর হবে যে, আইন – বিচার ব্যাবস্থা ছাড়াই এই বিশাল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। প্রভূত দোকান পাট, রাস্তা ঘাট থাকায়, এটাই স্বাভাবিক এদের নিজস্ব আইন নিয়মের প্রচলন ছিল। এটি স্মরণ রাখা উচিত যে ওজন ও পরিমাণ এখানে প্রথম পরিচালিত হয়। তাই বিভিন্ন নিয়ম নিয়ে বিবাদে, বিচার ব্যাবস্থার প্রচলন ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *